ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য ক্লিক করুন।
হযরতওয়ালা দা.বা. এর কিতাব অনলাইনের মাধ্যমে কিনতে চাইলে ভিজিট করুনঃ www.maktabatunnoor.com
হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন।
লেখক: মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
বুযুর্গদের কাশফ, কারামত, ইলহাম এবং গাউস, কুতুব ও আবদাল সম্বন্ধে আকীদা
নবী-রাসূল ব্যতীত যেসব খাস বান্দা আল্লাহ তা‘আলার হুকুম এবং নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের তরীকা মত চলেন, নাফরমানী করেন না এবং আল্লাহ তা‘আলাকেই স্বীয় কর্মের অভিভাবক মনে করেন পরিভাষায় তাদেরকে বুযুর্গ/ওলী বলা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বুযুর্গদের থেকে কখনো কখনো কারামত এর বহিঃপ্রকাশ ঘটান। তবে তা বুযুর্গ হওয়ার জন্য শর্ত নয়। (মাজমূআতুত তাওহীদ ২/৬৪৩, আলমাজমূআতুস সুন্নিয়্যাহ পৃ: ৫৬৮)
কাশফ, কারামত, ও ইলহাম
নবী নন-এমন কোন বুযুর্গ ব্যক্তি থেকে প্রচলিত রীতির ব্যতিক্রম কোন বিষয় সংঘটিত হওয়া কিংবা বুযুর্গ বা ওলী আওলিয়াদের আল্লাহ তা‘আলা যেসব অসাধারণ কাজ দেখিয়ে থাকেন পরিভাষায় তাকে কারামত বলা হয়। (আলমাজমূআতুস সুন্নিয়্যাহ পৃ: ৫৬৯৮) আর জাগ্রত বা নিদ্রিত অবস্থায় বুযুর্গরা যেসব ভেদের কথা জানতে পারেন বা চোখের অগোচর জিনিসকে দিলের চোখে দেখতে পারেন তাকে বলা হয় কাশফ ও ইলহাম।
এ সম্বন্ধে আকীদা
বুযুর্গদের কারামত, কাশফ ও ইলহাম সত্য। কারমত সত্য হওয়া কুরআন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কুরআনে কারীমে বর্ণিত হযরত মারইয়ামের কাছে অমৌসুমী ফল আসা এবং আসিফ ইবনে বারখিয়া কর্তৃক ইয়ামান হতে বিলকীসের সিংহাসন মূহুর্তে সুলাইমান আ: এর দরবারে উপস্থিত করা সবই কারামতের অন্তর্ভুক্ত।
কাশফ ও ইলহাম শরী‘আতের মুতাবেক হলে তা গ্রহণযোগ্য অন্যথায় নয়। কাশফ ও ইলহাম শরী‘আতের দলীল নয় এর দ্বারা কোন আমল প্রমাণিত হয়না।
কারামত কাশফ ইলহাম বুযুর্গ এবং ওলীদের দ্বারাই হয়ে থাকে, যারা আল্লাহ তা‘আলার পরম প্রিয় বান্দা। পক্ষান্তরে যারা শরী‘আতের ধার ধারেনা, আকাম কুকাম সব করে আবার নিজেদেরকে পীর, বুযুর্গ বলে দাবী করে, সাধারন মানুষ না বুঝে এদেরকে পীর বললেও এরা হক্কানী পীর নয় এরা হলো ভন্ডপীর। এরা অলৌকিক কোন কিছু দেখালে সেটাকে কারামত মনে করা যাবেনা বরং বুঝতে হবে সেটা যাদু, ভেল্কিবাজী কিংবা শয়তানের কারসাজী এসব দেখে ধোঁকায় পড়ে তাদের ভক্ত হওয়া যাবেনা কারণ এতে ঈমান হারা হয়ে নিজের আখেরাত বরবাদ হওয়ার আশংকা আছে। (আলমাজমূআতুস সুন্নিয়্যাহ পৃ: ৫৬৭০)
আবদাল, গাউস,কুতুব
১.কুতুবঃ তাকে কুতুবুল আলম, কুতুবুল আকবার, কুতুবুল ইরশাদ ও কুতুবুল আকতাবও বলা হয়। আলমে গায়েবের মধ্যে এ কুতুবকে আব্দুল্লাহ নামে আখ্যায়িত করা হয়। তার দু’জন উযীর থাকেন যাদেরকে ইমামাইন বলা হয়। ডানের উযীরের নাম আব্দুল মালিক। বামের উযীরের নাম আব্দুর রব। এছাড়া আরো বারো জন কুতুব থাকেন, সাত জন সাত একলীমে থাকেন তাদেরকে কুতুবে একলীম বলা হয় । আর পাঁচ জন ইয়েমেনে থাকেন তাদেরকে কুতুবে বেলায়েত বলা হয়। এই নির্দিষ্ট কুতুবগণ ব্যতীত অনির্দিষ্টভাবে প্রত্যেক শহরে এবং গ্রামে থাকেন একজন করে।
গাওসঃ গাওস মাত্র এক জন থাকেন । কেউ কেউ বলেছেন কুতুবকেই গাওস বলা হয়। কেউ কেউ বলেছেন গাওস ভিন্ন তিনি মক্কা শরীফে থাকেন।
আবদালঃ আবদাল থাকেন চল্লিশ জন।
বুযুর্গানে দীন লিখেছেন এই তিন প্রকার সহ মোট বার প্রকার অলী-আওলিয়া মানব জগতে বিদ্যমান রয়েছে। যথাঃ ১.ইমামাইন ২.আওতাদ ৩.আখয়ার ৪.আবরার ৫. নুকাবা ৬. নুজাবা ৭. আমূদ ৮. মুফাররিদ ৯. মাকতুম -(তা’লীমুদ্দীন: পৃ. ১৪৩)
এসম্বন্ধে আকীদা
প্রিয় পাঠক!
ওলীদের এই প্রকার ও বিবরণ সম্পর্কে জানার মধ্যে কোন সার্থকতা নেই কারণ এ সম্পর্কে কুরআন-হাদীসে খুলে কিছু বলা হয়নি, শুধু বুযুর্গানে দীনের কাশফের দ্বারা এটা জানা গেছে। আর কাশফ যার হয় (শরী‘আতের খেলাফ না হওয়ার শর্তে) তার জন্য সেটা দলীল, অন্যদের জন্য নয়। সুতরাং এগুলো নিয়ে বেশী ঘাটাঘাটি না করাই শ্রেয়।
এ ধরণের কাশফি মা’লুমাত হাসিল করার পিছনে সময় নষ্ট না করে প্রত্যেকেরই নিজের নফসের ইসলাহের প্রতি গুরুত্ব দেয়া একান্ত কর্তব্য। নফসের ইসলাহ না করে দিবা-রাত্রি ধ্যানে মগ্ন থাকাতে কোনো ফায়দা নেই।