ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপের নতুন আপডেট এসেছে। আমরা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, আমরা সবাই ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপটি আপডেট করে নেই।

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপ ব্যবহারকারীদের সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের ২টি ওয়েবসাইটই হ্যাক হচ্ছিল। ফলে আমাদের ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো কিতাব, প্রবন্ধ ডাউনলোড করতে, পড়তে এবং বয়ান ডাউনলোড করতে, শুনতে অসুবিধা বোধ করছিল। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। ফলে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য এবং হ্যাকারদের থেকে আরো বেশী নিরাপদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এ্যাপটি আপডেট করেছি।

আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমান আপডেটে অনেক নতুন দীনী প্রয়োজনীয় জিনিস সংযোগ করা হয়েছে যা যে কোন দীনদার ব্যবহারকারীর জন্য আনন্দের বিষয় হবে বলে আশা করি।

যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ নতুনভাবে কাজ করেছি তাই এ্যাপটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনাদের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আগের চেয়ে আরো সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ। আর আমরা এখন পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছি তাই আপনাদের নজরে কোন ভুল বা অসঙ্গতি নজরে পড়লে আমাদের উপর নারাজ না হয়ে সুপরামর্শ দেয়ার বিশেষ আবেদন রইলো।

পরামর্শ দেয়ার ঠিকানা: islamijindegi@gmail.com

এতোদিন আমরা ২টি ওয়েবসাইট চালিয়েছি www.darsemansoor.com এবং www.islamijindegi.com আমরা এই দুটি ওয়েবসাইটের সমস্ত তথ্য সহ আরো অনেক জিনিস নতুন সংযোগ করে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছি। সবাইকে উক্ত ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
www.islamidars.com

হযরতওয়ালা শাইখুল হাদীস মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. এর বয়ান এবং সমস্ত কিতাব, প্রবন্ধ, মালফুযাত একসাথে ১টি অ্যাপে পেতে ইসলামী যিন্দেগী অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করুন। Play Storeএবং  App Store

তাবীজ-কবজ ও ঝাড়-ফুঁক সম্বন্ধে আক্বিদা

বর্তমান যুগে ঝাড়-ফুঁক, তাবীজ-কবজের ব্যপারে মানুষের মাঝে বাড়া-বাড়ি ও ছাড়া-ছাড়ি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কেউ কেউ তো ঝাড়-ফুঁক, তাবীজ-কবজকে একেবারে অস্বীকার করে এবং এ সকল কাজকে না-জায়িয, হারাম এমনকি শিরক ও মনে করে। অপর দিকে কেউ কেউ তাবীজ-কবজে এতটাই বিশ্বাসী যে, তাবীজ-কবজকে স্বয়ংক্রিয় ও নিজস্ব কার্যক্ষমতার অধিকারী মনে করে এবং প্রতিটি কাজেই তাদের একটি তাবীজ কাম্য। অথচ উল্লেখিত উভয়পন্থার কোনটিই সঠিক নয়। বরং তাবীজ-কবজকে উসীলা মনে করে কুরআন-হাদীসে বর্ণিত নিয়ম অনুসারে আমল করাই হল একমাত্র সহীহ তরীকা। (সূত্র: জাস্টিস মুফতী তাকী উসমানী দা.বা. মুর্জারাবাতে আকাবির: পৃ: ৪৫)

শরী‘আতের দৃষ্টিতে রোগ হলে যেমন ঔষধ ব্যবহার করা বৈধ, তেমনি রোগ-বালাই ও বিভিন্ন সমস্যায় দু’আ-দুরূদের ব্যবহারও শরী‘আত-সম্মত। কুরআনের আয়াত, হাদীসে বর্ণিত বিভিন্ন দু’আ ও আল্লাহর নাম দ্বারা ঝাড়-ফুঁক ও তাবীজ ব্যবহার করা সর্বসম্মতিক্রমে জায়িয। (সূত্র: মিরকাতুল মাফাতীহ: পৃ: ৮/৩৬) তদ্রূপ কুফরী ও শিরকী থেকে খালী কোন নকশা বা শব্দ দ্বারা তৈরী তাবীজ ব্যবহার করাও জায়েয। পক্ষান্তরে কুফর ও শিরক মিশ্রিত নকশা বা শব্দ অথবা অর্থ বুঝে আসেনা এমন শব্দ দ্বারা তৈরী তাবীজ ব্যবহার করা না-জায়িয। (সূত্র: তাকমিলাতু ফতহিল মুলহিম: পৃ: ৪/৩২৫ হাদীস নং ৫৬৮৮) আর তাবীজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, এগুলোর নিজস্ব কোন কার্যক্ষমতা নেই। (সূত্র: বজলুল মাজহূদ: পৃ: ১১/৬১২ হাদীস নং ৩৮৮৩)  এগুলো উসীলা মাত্র। বহু হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে যে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম রা. ঝাড়-ফুক করতেন। বাকী যে সকল হাদীসে তাবীজ-কবজকে শিরক বলা হয়েছে, তার ক্ষেত্র হল শুধু ঐ সকল তাবীজ যাতে শিরকী ও কুফরী কথা রয়েছে। যেমনটি ছিল জাহিলী যুগের তাবীজ-কবজে। (সূত্র: আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ১/১৭৯)  অথবা যে ক্ষেত্রে তাবীজ-কবজকেই কার্যকরী বিশ্বাস করা হয়। তাবীজ কে উসীলা বিশ্বাস করে নয়। এমন বিশ্বাস নিয়ে এ্যালোপ্যথিক, হোমিও প্যথিক চিকিৎসা করানোও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাবীজ-কবজ নয়।

তাবীজ-কবজ জায়িয হওয়ার আরো কিছু দলীল:

১. হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী ও সাহাবায়ে কেরামের রা. আমল:

عن عمرو بن شعيب، عن أبيه، عن جده، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال: إذا فزع أحدكم في النوم فليقل: أعوذ بكلمات الله التامات من غضبه وعقابه وشر عباده، ومن همزات الشياطين وأن يحضرون فإنها لن تضره. فكان عبد الله بن عمرو، يلقنها من بلغ من ولده، ومن لم يبلغ منهم كتبها في صك ثم علقها في عنقه.

হযরত ‘আমর ইবনে শু‘আইব স্বীয় পিতা এবং তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “যখন তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, সে যেন বলেঃ أعوذ بكلمات الله التامات من غضبه وعقابه وشر عباده، ومن همزات الشياطين وأن يحضرون তাহলে সেই ভয় কিছুতেই তার কোনরূপ ক্ষতি করবেনা। আর আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর রা. এ দু’আ স্বীয় সন্তানদের মধ্যে যে বালিগ হয়েছে তাকে মুখে বলাতেন এবং তাদের মধ্যে যে বালিগ হয়নি এ দু’আ কোন পর্চায় লিখে দিতেন অত:পর তা তার গলায় ঝুলিয়ে দিতেন। (সূত্র: তিরমিযী শরীফ হাদীস নং ৩৫২৮)

২. তাবেয়ীগণের রহ. মাঝেও অনেক থেকে তাবিজ লিখে দেওয়ার কথা বর্ণিত আছে, যথা-    كان مجاهد يكتب للناس التعويذ فيعلقه عليهم  হযরত মুজাহিদ রহ. মানুষের জন্য তাবীজ লিখতেন এবং তাদের গলায় ঝুলিয়ে দিতেন। (সূত্র: মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: হাদীস নং ২৩৫৪৫) তদ্রূপ ইবনে শিরীন ও জাহহাক রহ. প্রমুখ থেকেও অনুরূপ আমল বর্ণিত আছে।

৩. হযরত মুফতী শায়েখ নিযাম রহ. তার বিখ্যাত ফাতাওয়া গ্রন্থ হিন্দিয়ায় লেখেনঃ ولا بأس بتعليق التعويذ তথা তাবীজ ব্যবহারে কোন সমস্যা নেই । (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩৫৯)

৪. তদ্রূপ আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ. তার ফাতাওয়া গ্রন্থে লিখেনঃ বিপদগ্রস্ত ও অন্যান্য অসুস্থ লোকদের জন্য জায়িয (তথা পবিত্র) কালি দ্বারা আল্লাহর কিতাব ও আল্লাহর যিকির থেকে কিছু লেখা এবং তাকে ধুয়ে পান করানো জায়িয হবে। (মাজমূ‘আয়ে ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া: মাস’আলা নং ১৯)

আসল সুন্নাত ঝাড়-ফুঁকঃ

হযরত আশরাফ আলী থানভী র. বলেনঃ ঝাড়-ফুঁক তাবীজ থেকেও বেশী উপকারী। এবং তার তাছীর তাবীজের তাছীর থেকে দ্বিগুণ। কেননা এ আমল হুযুর আলাইহিস সালাম স্বয়ং নিজে করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে এর তালকীন করেছেন। যেখানে ঝাড়-ফুঁক করার কোন লোক নেই, সেখানে তাবীজ ব্যবহার করা যেতে পারে। বাকী উভয় তরীকাই সাহাবায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত আছে। (সূত্র: মুর্জারাবাতে আকাবির: পৃ: ৪৯)