ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপের নতুন আপডেট এসেছে। আমরা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, আমরা সবাই ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপটি আপডেট করে নেই।

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপ ব্যবহারকারীদের সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের ২টি ওয়েবসাইটই হ্যাক হচ্ছিল। ফলে আমাদের ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো কিতাব, প্রবন্ধ ডাউনলোড করতে, পড়তে এবং বয়ান ডাউনলোড করতে, শুনতে অসুবিধা বোধ করছিল। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। ফলে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য এবং হ্যাকারদের থেকে আরো বেশী নিরাপদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এ্যাপটি আপডেট করেছি।

আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমান আপডেটে অনেক নতুন দীনী প্রয়োজনীয় জিনিস সংযোগ করা হয়েছে যা যে কোন দীনদার ব্যবহারকারীর জন্য আনন্দের বিষয় হবে বলে আশা করি।

যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ নতুনভাবে কাজ করেছি তাই এ্যাপটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনাদের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আগের চেয়ে আরো সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ। আর আমরা এখন পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছি তাই আপনাদের নজরে কোন ভুল বা অসঙ্গতি নজরে পড়লে আমাদের উপর নারাজ না হয়ে সুপরামর্শ দেয়ার বিশেষ আবেদন রইলো।

পরামর্শ দেয়ার ঠিকানা: islamijindegi@gmail.com

এতোদিন আমরা ২টি ওয়েবসাইট চালিয়েছি www.darsemansoor.com এবং www.islamijindegi.com আমরা এই দুটি ওয়েবসাইটের সমস্ত তথ্য সহ আরো অনেক জিনিস নতুন সংযোগ করে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছি। সবাইকে উক্ত ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
www.islamidars.com

হযরতওয়ালা শাইখুল হাদীস মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. এর বয়ান এবং সমস্ত কিতাব, প্রবন্ধ, মালফুযাত একসাথে ১টি অ্যাপে পেতে ইসলামী যিন্দেগী অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করুন। Play Storeএবং  App Store
Install App "Islami Jindegi"
 

باسمه تعالي

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তা‘আলার এবং তাসবীহ পাঠ করছি তাঁর,যিনি আমাদেরকে ঈমানের মতো মূল্যবান দৌলত দান করেছেন। দুরূদ ও সালাম পাঠ করছি তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর যিনি এই পরম দৌলত রাব্বুল ‘আলামীনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছিয়েছেন।

পবিত্র কুরআনের সূরা ফাতিহায় মুমিন বান্দাদেরকে আল্লাহর কাছে সরল পথের তাউফীক প্রার্থনা করার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আহলে ইলমের কাছে এ কথা অজানা নয় যে, “সরল পথ” বলতে এখানে নির্দিষ্ট কোন আমল উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো নবী, রাসূল, সিদ্দীক, শহীদ ও নেককারদের আমল ও কর্মপন্থা।

সুতরাং সরলপথ প্রাপ্ত হতে হলে আমাদের করণীয় হচ্ছে,আখেরী নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত এবং আখেরী নবী কর্তৃক স্বীকৃত ও সমর্থিত পূর্ববর্তী আম্বিয়া আ. এর আদর্শ সহ সাহাবায়ে কিরাম, সিদ্দীকীন ও সালেহীনের পথ ও পন্থা অনুসরণ করা। সেই সাথে নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালাম ও তাদের উম্মতের জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা থেকে শিক্ষা অর্জন করা। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করছেন,لَقَدْ كَانَ فِىْ قَصَصِهِمْ عِبْرَةٌ لِّاُولِى الْاَلْبَابِ “নিশ্চয়ই তাদের ঘটনাবলীতে রয়েছে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য শিক্ষা”।

বিষয়টি  অনুধাবনের জন্য আমরা যদি কুরআনে কারীমের দিকে লক্ষ করি,তাহলে দেখব,নিছক কোন কিসসা কাহিনীর কিতাব না হওয়া সত্ত্বেও পবিত্র কুরআনে পূর্ববর্তী অনেক নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম এবং তাঁদের উম্মতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে সেসব আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম কত নিষ্ঠা ও পরিপূর্ণতার সাথে আসমানী বাণী স্বীয় উম্মতের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন! সেই সাথে আলোচনা করা হয়েছে সেসব ভাগ্যবান মানুষের কথা,যারা নবীর ডাকে সাড়া দিয়ে এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার মাধ্যমে দুনিয়া আখেরাতের কামিয়াবী অর্জন করেছেন।

আরেকটি লক্ষ করার মতো বিষয় হলো,শুধু নেককারদের পথ বাতলে দিয়েই কুরআনে কারীম ক্ষান্ত থাকেনি। বরং যারা পয়গম্বরদের বিরুদ্ধাচরণ করে আল্লাহ তা‘আলাকে অস্বীকার করেছে,আখেরাতের নির্ধারিত আযাবের সাথে সাথে দুনিয়াতেই যে তারা বিভিন্ন প্রকার লোমহর্ষক আযাব,গযব ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সম্মুখীন হয়েছে;সে বর্ণনাও কুরআনে কারীমের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজন অনুযায়ী রয়েছে।

তবে এসব ঘটনাবলীর পরিপূর্ণ বিবরণ কুরআনে নেই। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পবিত্র কুরআনে সৎকর্মশীলদের পুরস্কার প্রাপ্তি ও অসৎকর্মীদের অশুভ পরিণতির  মূল ঘটনাগুলোর অংশ বিশেষ পেশ করা হয়েছে। পরিপূর্ণ ঘটনা জানতে হলে  হাদীস তাফসীর ও তারিখের কিতাবাদীর শরণাপন্ন হতে হয়।

কিন্তু হাদীস তাফসীর ও তারিখের কোন কোন গ্রন্থে এসব বিষয়ে বিভিন্ন ভিত্তিহীন বর্ণনা ও ইসরাঈলী রেওয়াতে পাওয়া যায়।  মুহাক্কিক উলামায়ে কিরামের নিকট যেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। তাই কুরআনে বর্ণিত পূর্ববর্তী নবীগণের উম্মতের অবস্থা ও পাপীদের উপর নেমে আসা শাস্তির ঘটনাবলী তাফসীর ও হাদীসের নির্ভরযোগ্য কিতাবাদীর আলোকে সবার সামনে পেশ করা ছিলো সময়ের দাবী।

আলহামদুল্লিাহ,আল্লাহ তা‘আলার অশেষ মেহেরবানীতে দীর্ঘদিন যাবৎ নির্ভরযোগ্য গ্রন্থাবলী থেকে এসকল ঘটনা একত্র করে প্রত্যেক ঘটনার সাথে শিক্ষণীয় বিষয়ের আলোচনা সহ “মাসিক আদর্শ নারীতে” ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হচ্ছিলো। সেই লেখাগুলোই এখন বাংলা কিতাব আকারে প্রকাশ পেতে যাচ্ছে।

এসব ঘটনার দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়,আল্লাহর অবাধ্যতা এবং ফলশ্রুতিতে শাস্তির উপযুক্ত হওয়ার মূল কারণ ছিলো “তাকওয়াহীনতা ও খোদাভীতির অনুপস্থিতি”। সুতরাং এসব ঘটনা থেকে আমাদের অর্জন করার মূল বিষয় হলো,তাকওয়া ও খোদাভীতি। সে বিবেচনা থেকেই এ কিতাবের নাম রাখা হয়েছে “এসো,তাকওয়া অর্জন করি”।

দু’খণ্ডে প্রকাশিত এ কিতাবের প্রথম খণ্ডে পাঠক হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালামের পূর্বের নবীগণের বর্ণনা পাবেন। দ্বিতীয় খণ্ডের শুরুর দিকে পাবেন যাকারিয়া আলাইহিস সালামের যুগের বর্ণনা। শেষ অংশে থাকবে সাইয়িদুনা রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগের বিবরণ।

সর্বোপরি পাঠকবৃন্দের কাছে নিবেদন,কোন ত্রুটি দৃষ্টিগোচর হলে আশা করি আমাদের জানাবেন। পরবর্তী সংস্করণে ইনশাআল্লাহ শুধরে নেয়া হবে।

পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে মিনতি,তিনি যেন আমাদের এ মেহনতটুকু কবুল করে নেন এবং আম্বিয়ায়ে কিরাম আলাইহিমুস সালামের এসকল ঘটনাবলী পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির দিকগুলো বুঝার এবং অন্তরে তাকওয়া তথা খোদাভীতি অর্জনের তাউফীক দান করেন! সেই সাথে এ কিতাবকে আখেরাতে আমাদের নাজাতের উসিলা বানান। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন!

মনসূরুল হক,

বিশিষ্ট খলীফা, হযরতওয়ালা শাহ আবরারুল হক রহ.

প্রধান মুফতী ও শাইখুল হাদীস,

জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া

নায়েবে আমীর,

মজলিসে দা‘ওয়াতুল হক, বাংলাদেশ।

লেখা বড় করুন লেখা ছোট করুন