ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য ক্লিক করুন।
হযরতওয়ালা দা.বা. এর কিতাব অনলাইনের মাধ্যমে কিনতে চাইলে ভিজিট করুনঃ www.maktabatunnoor.com
হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন।
লেখক: মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
অমুসলিমদের ব্যাপারে একটি বিশেষ আবেদন
মুহতারাম,
প্রিয় পাঠক!
এ মুহূর্তে আমি ভিন্ন একটি দীনী খেদমতের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছি, যা আমাদের উপর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম পক্ষ থেকে আরোপিত বিশেষ জিম্মাদারী। অথচ সে বিষয়ে আমরা সম্পূর্ণ বে-ফিকির আছি। মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অন্তর সর্বক্ষণ ব্যথিত ও ভারাক্রান্ত থাকত এ চিন্তায় যে, তাঁর সকল উম্মতকে কিভাবে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে বাঁচানো যায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন কোন কাফেরকে সত্তুর বারেরও বেশী ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। (মিরকাত-১১৯৭)
এ ব্যাপারে তিনি এত বেশী পেরেশান ও অস্থির থাকতেন যে, আল্লাহ তা‘আলা একথা বলে তাঁকে সান্তনা দিয়েছেন- “তারা যদি ঈমান না আনে তাহলে তাদের চিন্তায় কি আপনি নিজেকে ধ্বংস করে দিবেন?” (সূরা শু‘আরা-৩, কাহাফ-৬)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত হিসাবে আমাদের দিলের মধ্যে এ ধরনের দরদ, চিন্তা-ফিকির উদ্যম থাকা জরুরী। কারণ আমাদেরকে তাঁর অনুকরণ ও অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। (সূরায়েনিসা-৯)
অতএব তাঁর দিলের সব চেয়ে বড় ব্যাথা ও দরদ যদি আমাদের দিলে মোটেও না থাকে তাহলে কিভাবে অনুসরণ ও অনুকরণের হক আদায় করছি বলে দাবী করতে পারি? সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য হল প্রথমতঃ আমরা ঈমান-আমল সহীহ করার ফিকির ও প্রচেষ্টা চালাব। তারপর নিজের পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্ত্রী পুত্র, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশীদের ঈমান-আমল সহীহ করার জন্য শক্তি ও সামর্থ অনুযায়ী দাওয়াত দিব এবং প্রচেষ্টা চালাব। (সূরায়ে আসর: ২-৩, তাহরীম : ৬ ও শু‘আরা-২১৪)
এরই পাশাপাশি অমুসলিম ভাইদেরকেও শক্তি সামর্থ অনুযায়ী ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিব। (সূরায়ে আলে ইমরান-৬৪)
তাদের নিকট ইসলামের পরিচিতি তুলে ধরব এবং একমাত্র ইসলাম ধর্মই যে মানুষকে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে পারে-একথা বুঝাব। একাজের জন্য নিজের এলাকা, দেশ ও সারা বিশ্বের অমুসলিমদেরকে আমাদের কাজের কর্মক্ষেত্র মনে করব। (সূরায়ে আরাফ-১৫৮)
এবং নিজের শক্তি ও সামর্থ অনুযায়ী বিভিন্ন হেকমতের মাধ্যমে তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছাব। (সূরায়ে নাহল-১২৫)
আমাদের দ্বারা যদি একজন অমুসলিমও ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে সমগ্র দুনিয়া থেকে বড় দৌলত হাসিল হয়ে যাবে এবং এটা আমাদের নাজাতের সবচেয়ে বড় উসীলা হতে পারে। (বুখারী শরীফ হাঃ নং ৪২১০, ৬৪১৫)
এ কাজের অবহেলার দরুণ হাশরের ময়দানে আমাদের মুসীবতের সম্মুখীন হতে হবে এবং অমুসলিমগণ বিশেষ করে যারা বিভিন্ন লেন-দেন ও উঠা-বসায় আমাদের সাথে সম্পর্কিত বা যে কোনভাবে পরিচিত তারা আমাদেরকে দায়ী করবে। আমাদের একটু ফিকির ও চিন্তা-ভাবনা অনেক লোকের জাহান্নাম থেকে নাজাতের উসীলা হতে পারে এবং এক্ষেত্রে আমাদের অবহেলা হাজার হাজার লোকের জাহান্নামের কারণ হতে পারে এবং আমাদের নিজেদের বিপদ ডেকে আনতে পারে। সুতরাং আমাদের সকলের সচেতন হওয়া জরুরী এবং আরোপিত দায়িত্ব পালন করার জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত কর্তব্য। আল্লাহ তা‘আলা তাওফীক দান করুন।
বি. দ্র.: এ ব্যাপারে “বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম” বইটি সহায়ক হবে বলে আশা করি।