ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য ক্লিক করুন।
হযরতওয়ালা দা.বা. এর কিতাব অনলাইনের মাধ্যমে কিনতে চাইলে ভিজিট করুনঃ www.maktabatunnoor.com
হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন।
লেখক: মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
ইয়াহুদী-খ্রিস্টানদের মদদপুষ্ট এনজিওদের দ্বারা
ইসলাম ও বাংলাদেশের যে সকল ক্ষতির আশঙ্কা!
ভারতবর্ষের উলামা ও মুসলমানদের আন্দোলনের মুখে ব্রিটিশ শাসনের ইতি হয়। এরপর বাংলাদেশে ইংরেজরা কৌশল পরিবর্তন করে শিক্ষা ও সেবার ছদ্মাবরণে কাজ শুরু করে। বিশেষত মুসলিম জনসংখ্যাবহুল এই দেশে জনগণের নিরক্ষরতা ও দারিদ্রকে অবলম্বন করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফলে দেশ ও জাতি শত্রুদের গভীর চক্রান্তের শিকার হয়ে চরম সংকটের মুখে পতিত হতে যাচ্ছে। জাতিকে সতর্ক করার জন্য নিম্নে তাদের কিছু উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা তুলে ধরা হলো-
১. মুসলমানদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য জন্ম বিরতিকরণ পিল, জন্ম নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় উপকরণ বিনামূল্যে/স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করছে। সুখী পরিবারের স্লোগান দিয়ে এক/দু‘টির বেশি সন্তান না নেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। যাতে যিনা-ব্যভিচার বৃদ্ধি পায়। জনসংখ্যা সীমিত থাকে এবং আল্লাহ তা‘আলার গযব তরান্বিত হয়।
২. বাচ্চাদেরকে কুরআনী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার জন্য কিন্ডারগার্টেনের নামে খুব সকালেই তাদেরকে ঘর থেকে বের করে স্কুলমুখী করছে।
৩. শিক্ষার্থীদেরকে সেক্যুলার বানানোর জন্য ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছে।
৪. মা-বোনদেরকে নির্লজ্জ ও বেহায়া বানানোর জন্য সমঅধিকার, স্বনির্ভরতা ও স্বাবলম্বী হবার মধুর স্লোগান দিয়ে অফিস-আদালত, গার্মেন্টস ও হাট-বাজারের সর্বত্র নারীর অবাধ বিচরণের সুযোগ করে দিয়েছে। এতে অনেক পাপাচার সংঘটিত হচ্ছে। অনেকেই ইজ্জত-সম্মান ও প্রাণ হারাচ্ছে।
৫. সীমান্ত ও দারিদ্রপ্রধান এলাকাগুলোতে বিনামূল্যে, স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা, খাদ্য ও বাসস্থান প্রদানের চটকদার স্লোগানের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে ধর্মান্তকরণের কাজ করে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ মুসলমান ঈমানহারা হয়ে গেছে এবং এ ধারা চালু আছে।
৬. বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়ার জন্য চড়া সুদে ঋণ দিচ্ছে এবং মোবাইল কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে এবং তাদের বিলবোর্ড ও গভীর রাত্রের সুযোগ-সুবিধার কারণে যুবক-যুবতীরা চরিত্রহীন হয়ে পড়ছে।
৭. মাদরাসা শিক্ষার মূলধারাকে নষ্ট করে পারদর্শী ও হক্কানী আলেম তৈরির রাস্তা বন্ধ করার জন্য সরকারকে দিয়ে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে স্বীকৃতির নামে তা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
৮. তরুণ-তরুণীদের মাঝে অবাধ মেলামেশার পরিবেশ তৈরি করার জন্য সহশিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে, যা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম।
৯. বিবাহের আগে যুবক-যুবতীদের মেলামেশা নিরাপদ করার জন্য মোড়ে মোড়ে স্বাস্থ্যসেবার নামে ‘মেরি স্টোপস’ প্রতিষ্ঠা করেছে।
১০. আল্লাহ তা‘আলার গযবকে তরান্বিত করার জন্য ‘এইডস প্রতিরোধে’র ছদ্মাবরণে অভিশপ্ত সমকামিতাকে ব্যাপক করছে।
১১. বাংলাদেশকে একটি খ্রিস্টানরাজ্যে পরিণত করার জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সেই পরিকল্পনারই অংশ হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত সকল স্তরে তারা নিজেদের সমমনা লোক বসিয়েছে, যারা ক্ষমতার জোরে তাদের দেয়া (ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী) এজেন্ডা (পরিকল্পনাগুলো) ঠাণ্ডা মাথায় একের পর এক বাস্তবায়ন করে চলেছে।
১২. পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীনে বড় বড় হাসপাতাল তৈরি করে সাগর পথে অস্ত্র আমদানি করে মজুত করার নিরাপদ পথ তৈরি করেছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
১৩. আকাশপথে বাংলাদেশের প্রধান প্রবেশদ্বার হযরত শাহ জালাল রহ. আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব ভিনদেশীদের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধ সরঞ্জাম আমদানির পথকে সুগম করছে।
১৪. তারা যেহেতু অদূর ভবিষ্যতে আবারো এ দেশের ক্ষমতার মসনদে বসার স্বপ্ন দেখছে, তাই নিজেদের চলাফেরা নির্বিঘ্নে করার জন্য সারা দেশে, এমনকি ধানক্ষেতে, অলি-গলিতে রাস্তা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে কালভার্ট, ব্রীজ ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে। কিন্তু এগুলোর সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য কাউকে বুঝতে দেয়া হচ্ছে না। বরং এটাই বোঝানো হচ্ছে যে, এটা দেশের উন্নতি সাধন।
১৫. পর্যায়ক্রমে কাফেরদের কৃষ্টি-কালচার একটার পর একটা জারি করে এ দেশের মুসলমানদের দীন-ঈমান ধ্বংস করছে। পহেলা বৈশাখের পূজা, হোলি ইত্যাদি দিন দিন ব্যাপক করা হচ্ছে। মুসলমানদের ছেলে-মেয়েরা ‘ভালোবাসা দিবস’ পালন করে চরম বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতার পরিচয় দিচ্ছে।
সারকথা, মৌলিকভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, দীনী শিক্ষার বিলুপ্তিকরণ, সেক্যুলার শিক্ষার প্রচলন, ধর্মান্তকরণ, অর্থনৈতিক শোষণ, যিনা-ব্যভিচার ব্যাপক করণ ও বাংলাদেশকে একটি খ্রিস্টানরাজ্যে পরিণত করণের লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছে। অতএব, সংকটাপন্ন এ দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করতে হলে দা’ওয়াত ও তা‘লীমের মেহনতের কোন বিকল্প নেই। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে দীনের সুরক্ষায় মেহনত-মুজাহাদা করার তাউফীক দান করুন। আমীন।