ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য ক্লিক করুন

হযরতওয়ালা দা.বা. এর কিতাব অনলাইনের মাধ্যমে কিনতে চাইলে ভিজিট করুনঃ www.maktabatunnoor.com

হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন

হযরতওয়ালা শাইখুল হাদীস মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. এর বয়ান এবং সমস্ত কিতাব, প্রবন্ধ, মালফুযাত একসাথে ১টি অ্যাপে পেতে ইসলামী যিন্দেগী অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করুন। Play Storeএবং  App Store
 

আজ থেকে প্রায় সাড়ে চৌদ্দ’শ বছর আগে। মক্কার হেরা গুহায় জ্বলে উঠলো একটি আলো। হিদায়াতের আলো। সে আলোয় কল্পনার চেয়েও কম সময়ে আলোকিত হলো মক্কার চারিধার। তারপর খুব দ্রুতই আলোকিত হতে লাগলো সারা বিশ্ব। আরব থেকে কত দূরে এই বাংলা! এখানেও ইসলামের আলো পৌঁছে গেলো সাহাবায়ে কেরামের যুগেই।

ইসলামের সার্থক এ জাগরণ এমনিতেই হয়ে যায়নি। এর পেছনে রয়েছে বহু মনীষীর বিনিদ্র রজনী, দা‘ঈদের আত্মত্যাগ আর আকাবিরদের কুরবানী। এঁদের সফল সাধনার কারণেই আজ ইসলাম এতটা সুবিন্যস্ত, কালোত্তীর্ণ। মানব জীবনের প্রতিটি বিষয়ে রয়েছে ইসলামের সুনির্দিষ্ট বিধান ও সমাধান। এ কারণেই ইসলাম সবসময়ই যুগোপযোগী।

কিন্তু ইসলামকে সাড়ে চৌদ্দ’শ বছরের পুরনো বলে এর আদর্শকে মানতে নারাজ কেউ কেউ। তারা বলে, উটের যুগের ইসলাম রকেটের যুগে চলতে পারে না। আশ্চর্য লাগে! ইসলামে কি শুধু উটের যুগের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে? অথবা শুধু উটকেই বাহন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মতো সংকীর্ণতা রয়েছে? তাতো নয়। বরং ইসলামে যেমন উটের পিঠে নামায পড়ার বিধান রয়েছে, ঠিক তেমনি রকেটে কিভাবে নামায পড়তে হবে তাও বলা হয়েছে। বাহন হিসেবে যেমন উটকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে, ঠিক তেমনি প্লেন আর রকেটকেও বৈধ কাজে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়নি। তাহলে বলুন, এতটা সার্বজনীন, প্রান্তিকতামুক্ত একটি ধর্মকে শুধু উটের যুগের সাথে সীমাবদ্ধ করে ফেলা কতটা যুক্তিযুক্ত?

পাঠক! সাড়ে চৌদ্দ’শ’ বছরের এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও ইসলামের এতটা সার্বজনীন থাকার কারণ হচ্ছে, আমাদের আকাবিররা দ্বীনকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করেছেন, পরবর্তীদের জন্য একে আগলে রেখেছেন আমৃত্যু। আমরা আমাদের নিকট অতীতের দিকেই তাকাই না কেন। এ উপমহাদেশের মানুষের জন্য হাকীমুল উম্মত, মুজাদ্দিদুল মিল্লাত হযরত আশরাফ আলী থানভী রহ. ছিলেন একজন সফল সংস্কারক, আত্মার চিকিৎসক। তাঁর রূহানী ফায়েযে শুধু তাঁর যুগের মানুষই উপকৃত হয়েছে এমনটি নয়। বরং সে ফায়েয ও বরকত সমকালকে ছাপিয়ে ছড়িয়ে গেছে কাল থেকে কালে, যুগ থেকে যুগে। আমার শাইখ মুহিউসসুন্নাহ হযরত মাওলানা সাইয়িদ শাহ আবরারুল হক (হারদুয়ী হুযূর) রহ. ছিলেন হযরত থানভী রহ.-এর ‘ইলমী আলোর সর্বশেষ কাসিদ। ঘরে ঘরে তিনি জ্বেলে দিতে চেষ্টা করেছেন সুন্নাতের মশাল। তাঁরই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজ উপমহাদেশের মসজিদ মাহফিলে সুন্নাত চর্চার হারানো ঐতিহ্য ফিরে এসেছে। চেতনা জেগে উঠেছে সবার মাঝে।

দ্বীনী সংস্কারের কাজে হযরত হারদুয়ী হুযূরের বিশেষ একটি পদ্ধতি ছিলো, সমাজের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয়ে জরুরী হিদায়াত সম্বলিত পরচা তৈরি করে বিতরণ করা। দ্বীনী খেদমতের ব্যাপারে হযরতের এ স্বতন্ত্র ধারাকে অব্যাহত রাখতে আমরা আমাদের সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করেছি। সে ধারাবাহিকতায় বেশ কিছু পরচার সন্নিবেশে ইতোমধ্যে দু’টি গ্রন্থ প্রকাশও পেয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আ’মালুস সুন্নাহ’ ও ইশা‘আতুস সুন্নাহ’ নামের সে দু’টি গ্রন্থের পর বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি সে সারির তৃতীয় গ্রন্থ।

বরাবরের মতো এ গ্রন্থেও স্থান পাচ্ছে আকাইদ, মু‘আমালাত, মু‘আশারাত ও আখলাক সম্পর্কিত চব্বিশটি প্রবন্ধ। সেই সাথে দা’ওয়াত সম্পর্কিত দু’টি প্রবন্ধও একে সমৃদ্ধ করেছে।
এ বইয়ের সংকলনে সর্বক্ষেত্রে হয়তো হযরতের নির্দেশনা সঠিকভাবে অনুসরণ আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে এতে যা কিছু ভালো ও কল্যাণকর বিষয় রয়েছে, সবি নিশ্চয়ই আমার শায়েখের রূহানী ফায়েযের বরকত। আর থেকে যাওয়া ভুলগুলো সম্পর্কে কল্যাণকামীতার হৃদয় নিয়ে আমাদের অবগত করলে কৃতজ্ঞ হব।

কিতাব সংকলনের বিভিন্ন পর্যায়ে আমার কিছু শাগরিদ আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে। আমি তাদের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করি। দু‘আ করি, এ কিতাবের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা ছড়িয়ে দিন হিদায়াতের আলো। দূর করে দিন গোমরাহীর পুঞ্জীভূত অন্ধকার। আখিরাতে এ কিতাবকে বানান নাজাতের উসিলা। আমীন, ইয়া রব্বাল ‘আলামীন!

বিনীত
মনসূরুল হক
প্রধান মুফতী ও শাইখুল হাদীস
জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া
আলী অ্যান্ড নূর রিয়েল এস্টেট, মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

লেখা বড় করুন লেখা ছোট করুন