ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য ক্লিক করুন।
হযরতওয়ালা দা.বা. এর কিতাব অনলাইনের মাধ্যমে কিনতে চাইলে ভিজিট করুনঃ www.maktabatunnoor.com
হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন।
লেখক: মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. বিভাগ : বই ও আর্টিকেল তারিখ : ২৬-মার্চ-২০১৭
ভারতবর্ষ মাযহাবপন্থী মুসলমানদের আবাসভূমি। এখানের মুসলমানরা মাযহাব মেনে ইসলাম পালনে অভ্যস্ত। বিশেষত এখানের অধিবাসীদের প্রায় ৯০ শতাংশই হানাফী মাযহাব মাননে-ওয়ালা। ১২৪৬ হিজরী পর্যন্ত চার মাযহাবের কোনো মাযহাব মানে না এমন মুসলমানের অস্তিত্ব এদেশে পাওয়া যায় না। ১২৪৬ হিজরীতে মৌলভী আব্দুল হক বেনারসী ইংরেজদের পরোক্ষ মদদে মুসলমানদের ঐক্যের মাঝে ভাঙ্গন সৃষ্টির জন্য আহলে হাদীস বা লা-মাযহাবী ফেরকার আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে হুসাইন আহমাদ বাটালবী এই ফেতনাকে ইংরেজদের প্রত্যক্ষ মদদে আরো চাঙ্গা করেন।
বর্তমানে আমাদের দেশে লা-মাযহাবিয়্যাতের ফেতনা চরম আকার ধারণ করেছে। যুগে যুগে উলামায়ে কেরামই নব-উদ্ভাবিত সমস্ত ফেতনার বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন। একজন নায়েবে নবী হিসাবে চলমান এই ফেতনা সম্পর্কে সাধারণ মুসলমানদেরকে সতর্ক করা আমি আমার দায়িত্ব জ্ঞান করি। আর সেই দায়িত্ব পালনের জন্য তারা যেসব মাসআলা নিয়ে ফেতনা করে থাকে, সেসব মাসআলা পরচা আকারে তৈরি করে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছি। বক্ষ্যমান গ্রন্থটি সেই পরচাসমূহেরই সংকলন। গ্রন্থে প্রথমত হানাফী মাযহাবের দলীল উল্লেখ করা হয়েছে ,দ্বিতীয়ত লা-মাযহাবীদের দলীল উল্লেখ করা হয়েছে, তৃতীয়ত তাদের দলীল খণ্ডন করে তাদের ভ্রষ্টতা প্রমাণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, লা-মাযহাবীদের অনেক দলীল চার মাযহাবের কোনো কোনো মাযহাবে হুবাহু পাওয়া যায়। এখন প্রশ্ন হয়, তাহলে কি ঐসব মাযহাবের অনুসারীরাও ভ্রষ্টতার মধ্যে রয়েছে? এর উত্তর হল: যারা কোনো মুজতাহিদের মাযহাব অনুযায়ী কুরআন-হাদীসের উপর আমল করবে তারা ভ্রষ্ট বিবেচিত হবে না। কারণ সাধারণদের দায়িত্ব হল মুজতাহিদের কাছে জিজ্ঞেস করে সে অনুযায়ী আমল করা (সূরা নাহল:১৬)। আর মুজতাহিদ ইজতিহাদ করতে গিয়ে কোনো ভুল করলে তার কোনো পাপ হয় না (আল ওরাকাত ফিল উসূল পৃ.৬৫)। বরং ভুল করলেও একটি সাওয়াব হয়, আর ইজতিহাদ করে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারলে দুইটি সাওয়াব হয়। (বুখারী হা.২৩১) সুতরাং মাযহাবী মুসলমানরা মাযহাব মানতে গিয়ে ভ্রষ্টতার শিকার হবে না। আর লা-মাযহাবীরা যেহেতু কোনো মুজতাহিদকে মানে না, আর নিজেরাও তারা মুজতাহিদ নয়, তাই অনধিকার চর্চার অপরাধে তারা ভ্রষ্ট বিবেচিত হবে। তাদের উদাহরণ, হাতুড়ে চিকিৎসকের ন্যায়। যার ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গেলে এর দায়ভার তাকেই বহন করতে হয়।
যাই হোক কিতাব প্রকাশের এই শুভক্ষণে আমি আমার ঐসব শাগরিদদের বিশেষভাবে স্মরণ করছি যারা কিতাবের ‘মাওয়াদ’ সংগ্রহে আমাকে সহযোগীতা করেছে। আল্লাহ তাআলা উভয় জাহানে তাদেরকে কামিয়াব করুন।
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়। তাই নির্ভুল করার চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ভুল থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। বিজ্ঞ কোনো পাঠক যদি কোনো ভুলের ব্যাপারে অবহিত করেন, তাহলে তা সাদরে গ্রহণ করা হবে।
আল্লাহ তাআলা এই কিতাবের মাধ্যমে আম-খাস সবাইকে সমান উপকৃত করুন এবং এই মেহনতের উসীলায় লা-মাযহাবীদের ফেতনার দ্বার বন্ধ করে দিন। আমীন।